ভারত পাকিস্তান সংঘাত : কার লাভ কার ক্ষতি?

 

ভারত পাকিস্তান সংঘাত : কার লাভ কার ক্ষতি?


পশ্চিমারা সামরিক সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে ভারতকে। আর চীন দিচ্ছে পাকিস্তানকে। এই সামরিক সাহায্য দিন দিন বাড়ছে। এসব লক্ষণ দেখে বোঝা যাচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে কে কার পাশে থাকবে, সেই সমীকরণ বদলে যাচ্ছে।

শেষবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত ঘটেছে ২০১৯ সালে। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের আণবিক অস্ত্রভান্ডারে অনেক ছোটাছুটি লক্ষ করেছিল। এই নড়াচড়ার পরিমাণ আতঙ্কিত হওয়ার মতো ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেওকে মাঝরাতে ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয়েছিল। তিনি ভারত আর পাকিস্তানের নেতাদের সেই মাঝরাতেই ফোন করে আশ্বস্ত করেছিলেন যে কোনো পক্ষই পারমাণবিক অস্ত্রের হামলা করছে না।

ছয় বছর পর দুই দেশ আবার সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবার ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক মিত্রদেশের হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেছে।

এশিয়ার এই অংশ এমনিতেও ঝুঁকিপূর্ণ। তিনটি দেশ এখানে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী—চীন, ভারত ও পাকিস্তান। এদের মধ্যে অস্ত্র সরবরাহের প্রবাহ বদলে গেছে।

ভারত ঐতিহ্যগতভাবে নিরপেক্ষ দেশ ছিল। এখন তারা স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ে ঢুকে গেছে। সেখান থেকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র খরিদ করছে। আরও অস্ত্র কিনছে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে।  সেই সঙ্গে কমিয়ে দিয়েছে রাশিয়া থেকে সস্তা অস্ত্র কেনা। এই রাশিয়া শীতল যুদ্ধের সময় ভারতের মিত্র ছিল।

ওদিকে আফগানিস্তান যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রাসঙ্গিকতা আর আগের মতো নেই। পাকিস্তান এখন আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কিনছে না। পাকিস্তান এখন ঝুঁকেছে চীনের দিকে। সেখান থেকে কিনছে তাদের অধিকাংশ অস্ত্র।

এসব সম্পর্ক বদলের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশের সবচেয়ে পুরোনো দুশমনি এক নতুন মোড় নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র একদিকে চীনকে মোকাবিলা করতে ভারতকে আশকারা দিচ্ছে। অন্যদিকে চীন নিজের বিনিয়োগ ও পৃষ্ঠপোষকতা বাড়িয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানের জন্য।

একই সময়ে সীমান্তে জায়গা নিয়ে চীন আর ভারতের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই দুই দেশের সেনারা জড়াচ্ছে সংঘাতে। ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কযুদ্ধ শুরু করার পর দুই পরাশক্তি চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্মরণকালের মধ্যে খারাপ অবস্থার মধ্যে গিয়ে ঠেকেছে।

সব মিলিয়ে এ অঞ্চলে শত্রু আর মিত্রের হিসাব একেবারে পাল্টে গেছে। ভারতের নিরাপত্তার স্বার্থে এখন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। অন্যদিকে পাকিস্তানের জন্য একই ভূমিকা নিচ্ছে চীন। ভারত যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র এতটা জোরালোভাবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেখা যায়নি।

কাশ্মীরে ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে। তখন ট্রাম্প প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের নেতারা ভারতের প্রতি শক্তিশালী সমর্থন জানান। অনেক ভারতীয় কর্মকর্তার কাছে তা যেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার ‘সবুজসংকেত’ বলেই মনে হয়েছে। যদিও প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সংযম দেখাতে বলেছিল।

Smartwatchs

Post a Comment

Previous Post Next Post